উন্মুক্ত, জাতীয় ও সাত কলেজের বিবিএ কোনটি সেরা! শিক্ষা তথ্য :: ২০২৪

আসসালামু আলাইকুম।পিয়নমামা জবস্ ব্লগ বসাইটের সুপ্রিয় ভিজিটর বন্ধুদের সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। বিগত পোস্টগুলোতে আমাকে অনেকেই কমেন্ট করেছিলেন যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিবিএ ও বাউবির অধীন বিবিএর পার্থক্যর বিষয়টা কি? সুতরাং উপরের পোস্টের শিরোনাম অনুযায়ী আজকে সেই সব বিষয়ে আলোচনা করবো।

প্রথমে জানার বিষয় হলো বিবিএ প্রোগ্রাম কি?

বিবিএ/ BBA এর পূর্ণরূপ ব্যাচেলর অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (Bachelor of Business Administration)। এটা ব্যাবসায় শিক্ষার ওপর যারা পড়াশোনা করতে চায় তাঁদের জন্য একটা ডিগ্রী। এই ডিগ্রী'র অধীনে ০৪ বছর ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিপনন, ব্যাংকিং, ফিন্যান্স, হিসাব বিজ্ঞান, হোটেল ম্যানেজমেন্ট ট্যুরিজম, আন্তজার্তিক ব্যবসা এইসব বিষয়ের ওপর পড়ানো হয় এবং সব কোর্সগুলা শেষ করে পরীক্ষায় পাস করতে পারলে এই ডিগ্রী পাওয়া যায়।
 
bba-course-information

যে সকল প্রতিষ্ঠানে বিবিএ (অনার্স) কোর্স পড়ানো হয়:

বাংলাদেশের সকল জেনারেল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভূক্ত কলেজ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ/স্টাডি সেন্টারে বিবিএ কোর্স পড়ানো হয়। বাংলাদেশের দেড় শতাধিক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে পরিচিত বিভাগ বা অনুষদ হচ্ছে ব্যবসায় প্রশাসন। এ বিভাগের অধীনে পড়ানো হয় বিবিএ এবং এমবিএ প্রোগ্রাম। হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি প্রকৌশল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া প্রায় সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা ইনস্টিটিউট খুলে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে। যেমন ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের  আইবিএ (ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট) সমূহও এই বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি দিয়ে থাকে। এ থেকেই ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও প্রতিষ্ঠানের চাহিদা বা গুরুত্ব অনুমান করা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মপরিধি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ব্যবসায় প্রশাসনে একজন স্নাতক (বিবিএ) তার কর্মজীবনে আকর্ষণীয় বেতন, উন্নত সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটিয়ে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদগুলোতে কাজের সুযোগ পান। কাজ করছেন বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায়। দেশের দারিদ্র বিমোচনেও রাখছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।

বিবিএ কোর্সে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা

যে কোনো শাখার শিক্ষার্থীরাই বিবিএ পড়তে পারেন। তবে বর্তমানের পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় চাকরিপ্রার্থীর চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা যাঁদের আছে, তাঁদেরই বিবিএ পড়তে অনুপ্রাণিত করতে চাই। এ ছাড়া যাঁরা চাকরি বা কাজের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ বা ঝুঁকি নেওয়ায় আগ্রহী এবং সৃজনশীল কাজে এগিয়ে আসতে চান, তাঁরাও বিবিএ পড়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনতে পারেন। তবে বিবিএ পড়ার আগে অবশ্যই জেনে নেওয়া ভালো যে এটি পড়তে গিয়ে একজন শিক্ষার্থীর নানা রকম চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা, পারস্পরিক সম্পর্ক বা যোগাযোগ উন্নয়ন এবং অনেক মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার মতো বিষয়গুলো রপ্ত করা আবশ্যক। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির সার্কুলার দিয়ে থাকে। 
 
Management-review

বিবিএ গ্র্যাজুয়েটদের এত কদর কেন?

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে বৈচিত্র্যময় কোর্সের সমাহার থাকে। যুগোপযোগী এসব কোর্সের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম সম্পর্কে আগেভাগেই ধারণা পেয়ে থাকেন। শিক্ষাজীবন থেকেই এদের মধ্যে একধরনের পেশাদারিত্বের লক্ষণ দেখা যায়। ফলে চাকরিদাতারা যে ধরনের স্মার্ট ও পটু কর্মী খুঁজেন, তার প্রত্যেকটি বিষয়ই পাওয়া যায় বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্নকারীদের মধ্যে। কারণ চার বছরের বিবিএ প্রোগ্রামে অসংখ্য অ্যাসাইনমেন্ট, ফিল্ড ওয়ার্ক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর, প্রেজেন্টেশন এ অংশ নিতে হয় শিক্ষার্থীদের। শেষ বর্ষে এসে তাদেরকে কোন একটি কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে হাতে কলমে কাজ শিখতে হয়। অর্থাৎ জব মার্কেটে যাওয়ার আগে তাদের একটি মানসম্মত প্রস্তুতি গ্রহণ হয়ে থাকে। এই পেশায় শুধু চাকুরী নই, নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবেও শুরু করা যায়। সর্বশেষ বলে রাখা ভালো, ব্যবসায় প্রশাসন একটি গতিশীল সাবজেক্ট। তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবর্তিত দেশ ও বৈশ্বিক বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে এটিও পরিবর্তনশীলও। ফলে সবসময়ই এর চাহিদা থাকবে আকাশচুম্বী।

বাংলাদেশে বিবিএ কোর্স কখন হতে চালু হয়?

বাংলাদেশে ব্যবসা প্রশাসন শিক্ষা বা বিবিএ-এমবিএ'র জোয়ারটা শুরু হয়েছে মূলত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হাত ধরে। যদিও এই বিষয়ে পড়ানো শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার-ও আগে। ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউট বা আইবিএ-তে এমবিএ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শুরু হয় এই ধারার পড়াশোনা এবং এর মাধ্যমেই বাংলাদেশে ব্যবসা ব্যাপারটাকে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার আওতায় আনার ধারণা চালু হয়।এর ২৭ বছর পর আইবিএ- তেই ১৯৯৩ সালে বিবিএ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আন্ডারগ্র্যাড পর্যায়েও ব্যবসা প্রশাসন পড়ানো শুরু হয়। তবে এখন যেমন ডাক্তারি বা প্রকৌশলের মতই ব্যবসা প্রশাসন পড়াশোনার জন্য দারুণ চাহিদাসম্পন্ন একটি বিষয় এবং এর কৃতিত্ব বা দোষ যা-ই বলা যাক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর।পরিস্থিতি এখন অনেকটা এমন-ই যে এটা প্রায় এসএসি পাশ করার মতই অত্যাবশ্যকীয় একটা ব্যাপার হয়ে গেছে চাকরির বাজারে।ঠিক কেন এই ডিগ্রিটা নিতে হবে সে সম্পর্কে ধারণা থাক আর না-ই থাক। চাহিদার কারণেই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মত সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেকগুলোতে খোলা হয়েছে ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউট, আসন সংখ্যা বেড়েছে সবখানেই এবং ডাক্তার-প্রকৌশলীসহ নানা পেশার মানুষজন-ও যা হোক কোনভাবে একটা এমবিএ লাগানোর জন্য সেগুলোতে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে ।
 
BBA-Title-Banner


বিবিএর অনার্স মেজর কোর্স বিষয়গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারনা

ফিন্যান্সঃ

ফিন্যান্স বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো মূলধন ব্যয় এখানে তোমাকে গড় মূলধন ব্যয় বের করার জন্য সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয়, অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন ব্যয় এবং ঋণ মূলধন ব্যয় বের করে গড় মূলধন ব্যয় নির্ণয় করতে হবে।ফিন্যান্স খুব ভাল সাবজেক্ট।যদি শিখে বের হতে পাররো অনেক লাভ।ম্যাথ পারতে হবে কিন্তু।ম্যাথে কাঁচা হলে ভুলেও ফিন্যান্স নেয়ার চিন্তা করবে না।পড়াশোনা অনেক।সো পড়ার ধৈর্য না থাকলে ফিন্যান্সের কাছে না যাওয়াই ভালো।

একাউন্টিং:

HSC তে যেহেতু করেছো(BS)।সো খুব সহজ মনে হতে পারে।আসলেও যারা HSC তে একাউন্টিং ভাল পারতো তারা এইখানে এসেও ভাল করে।ফিন্যান্স এন্ড একাউন্টিং দুটোই বস সাবজেক্ট কোন সন্দেহ নেই।কিন্তু ধৈর্য নিয়ে পড়তে হবে।দুটোতেই ম্যাথ ভাল পারতে হয়।প্রচুর পড়াশোনা করা লাগে।তবে যারা সায়েন্স থেকে এসেছো তাদের ক্ষেত্রে প্রাইমারিলি অনেক কিছু ধরতে পারবে না।বেটার হয় ম্যাথ ভাল পারলে ফিন্যান্সএকাউন্টিং নাও।দুটোই থিওরিটিক্যাল বিষয়টা বেশী গুরুত্ব দেয়।ক্রিয়েটিভিটি প্রকাশের সুযোগ নাই বললেই চলে।অন্তত বিবিএ তে।অনেক প্রফেশনাল কোর্স আছে।পাশ করতে পারলে বস্তায় ভইরা বেতন আনতে হবে বাড়িতে।

মার্কেটিং:

তোমার মাথায় কুচলা-পিচলা বুদ্ধি যদি থাকে মার্কেটিং নাও।বেস্ট তোমার জন্য।বিজনেস লাইনে নিজের ক্রিয়েটিভিটি দেখানোর জন্য দুনিয়ার সেরা সাবজেক্ট মার্কেটিং!! কি নাই!! প্রথাবদ্ধ চিন্তা থেকে নতুন কিছু করার হিউজ সুযোগ আছে মার্কেটিং বিষয়টাতে।মার্কেটিং পার্টের সাথে অনেক কিছু আছে।Research and Development, New Product Designing
পাড়ার মামা চাচারা খালি বিক্রি বাট্টার কথাই চিন্তা করে।কেও আবার বলে ‘ডেস্টিনি সাবজেক্ট’।কিন্তু এইটার ফিল্ড বিশাল।তুমি সাথে গ্রাফিক্স ডিজাইনটা শিখে ফেলতে পারলে তো সোনায় সোহাগা।থিওরি আছে।অনেকই আছে।আবার নতুন কিছু করার মজাও আছে।তবে যারা সায়েন্স থেকে আসতেছো আর ম্যাথে যদি দখল ভাল না থাকে তোমার জন্য মার্কেটিং বেস্ট !

ম্যানেজমেন্টঃ

বিবিএর ‘কমা’ সাবজেক্ট।কিন্তু জানো কি?? একজন একাউন্টেন্ট, ফিন্যান্সিয়াল এনালিস্ট,ব্র্যান্ড ম্যানেজার সবার নিয়োগ দেয় এই ম্যানেজমেন্টের লোকেরাই!! যদি টিমে কাজ করা ভাল পারো পাড়ার ক্রিকেট টিমকে ভাল লিড দিতে পার পাড়ার লিডার তুমি।অন্যের লিডারশীপ গ্রহণ করার মানসিকতা কম থাকে তোমার জন্য এইটা বেস্ট। থিওরিটিক্যাল বেশি।রেজাল্ট করা কঠিন।কিন্তু লোক ম্যানেজ করাটাই হবে তোমার পেশা!মজা না?মোটের ওপর তোমার মধ্যে লিডারশিপ জিনিসটা থাকা লাগবে।ডিপ্লোম্যাসি থাকা লাগবে।বারগেইন করার ক্ষমতা থাকা লাগবে।তাহলেই এই সাবজেক্ট তোমার জন্য।

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাঃ

এই পেশায় আসার আগে যেসব প্রতিষ্ঠানে এই বিভাগ রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা রাখা উচিত।সাধারণত বড় বড় দেশী এবং বহুজাতিক কোম্পানি গুলোতে এ বিভাগের পরিপূর্ণ কার্যক্ষেত্র রয়েছে।বিশেষ করে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, ব্যাংক, মিডিয়া হাউজ, ওষুধ কোম্পানী, প্রকাশনা সংস্থা, এনজিও, টেলিকমিউনিকেশন এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে এ বিভাগটির সুবিস্তৃত কার্যক্ষেত্র রয়েছে।সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন পর্যন্ত মানব সম্পদ উন্নয়ন নামে কোনো বিভাগ না থাকলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে 'ট্রেইনিং'/ 'স্ট্যাটিসটিক্স'/ 'প্ল্যানিং' ইত্যাদি বিভাগগুলোতে মূলত মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কিত কাজগুলোই করা হচ্ছে।এই বিভাগগুলোর নীতিমালা তৈরী করে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়, এবং সরকার কর্তৃক তা অনুমোদিত হয়।

National-University-Campus

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ অনার্স কোর্স

  • আধুনিক যুগের চাহিদা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার মানের সাথে তাল মিলিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ হতে চালু করে বিবিএ (অনার্স) কোর্স। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই কোর্সটি চালু করার মাধ্যমে বাংলাদেশের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও একধাপ এগিয়ে যায় যদিও নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষে এখনো পৌঁছাতে পারে নাই। অবশ্য আমরা আমাদের দেশে যে বিবিএ (অনার্স) কোর্সটি করি তা বিদেশী নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও পড়ানো হয়।
  • বিবিএ (অনার্স) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ০৪ বছর মেয়াদী একটি কোর্স যার বিষয়গুলো হল হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা এবং মার্কেটিং ও ফিন্যান্স বিষয় নিয়ে ০৪ বছর ধরে পড়াশোনা করা। শিক্ষার্থীরা পাঠদান গ্রহন এবং পরীক্ষা বাংলা ও ইংরেজি পদ্ধতিতে দিতে পারে, ইংরেজীতে কোন বাধ্যবাধকতা নাই। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ৯০% এর বেশি শিক্ষার্থ ীরা উত্তরপত্র গুলো বাংলাতে করেন।
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোতে ০৪ বছর মেয়াদি বিবিএ অনার্স কোর্সের সর্বমোট  খরচ হয়ে থাকে প্রায় ৪০,০০০ টাকা এবং বেসরকারি কলেজ গুলোতে খরচ হয়ে থাকে সর্বনিম্ন ৭০০০০/- হতে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা।  ০৪ বছরে ১২৮ ক্রেডিটে প্রায় ২৬ টি বই পড়তে হয়। 
  • এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সের কোর্স সংখ্যা অনেক কম। অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ অনার্স কোর্সে প্রায় ৪০ টি মত বই পড়তে হয় এবং পড়ার মাধ্যম আবশ্যিকভাবে ইংরেজি।  
nu-pass-notice

  • সুতরাং অনেক শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর কোয়ালিটি এখনো নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পিছনেই পড়ে আছে। এমনকি বর্তমান সময়ে ০৭ কলেজেরও পিছনে পড়ে গেছে।
  • উল্লেখ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আবার ০২ ধরনের বিবিএ কোর্স রয়েছে উপরে যেটি আলোচনা করলাম সেটি হলো সাধারন বিষয়ে অনার্স এবং অপরটি হচ্ছে প্রফেশনাল বিষয়ক অনার্স। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেশনাল অনার্স বিষয়ে আগামী পর্বে আলোচনা করার ইচ্ছা আছে। 
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ অনার্স কোর্সের প্রতিটি বিষয় বোর্ড পরীক্ষা ৮০ নম্বরের হয়ে থাকে বাকি ২০ মার্ক ইনকোর্স তথা স্যারেদের হাতে থাকে। এখানকার খাতা মূল্যায়ন শুধুমাত্র ০১ জন পরীক্ষক করে থাকেন। বর্তমান নিয়ম অনুসারে (২০২১-২২) শিক্ষাবর্ষ হতে কার্যকর হয়েছে যে, লিখিত কিংবা ইনকোর্সের মোট নাম্বার ৪০ পেলেই পাশ ধরা হবে আগে যেখানে আলাদাভাবে পাশের নিয়ম ছিলো।
  • আরেকটি বিষয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগের প্রবণতা হলো তেমন একটা ক্লাশ না করা, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ করার থেকে অধিকাংশ সময় প্রাইভেট পড়া নিয় ব্যস্ত থাকে। সুতরাং বছর জুড়ে দেখা যায় ক্যাম্পাসে ক্লাশ করার মত তেমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায় না, শুধু বোর্ড পরীক্ষা ও ইনকোর্সের পরীক্ষার সময় হাজিরা মেলে।
7th-college-campus

ঢাবি অধিভূক্ত কলেজের বিবিএ অনার্স কোর্স

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিবিএর প্রধান মেজর যে বিষয়গুলো পড়ানো হয় অধিভূক্ত ০৭ কলেজেও একই মেজর বিষয় নিয়ে যেমন: একাউন্টিং, ব্যবস্থাপনা, বিপণন, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং নিয়ে ০৪ বছরের অনার্স কোর্স করানো হয়। এখানে ১২৮ ক্রেডিটের প্রায় ৩২ টি মত কোর্স পড়তে হয়।
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যাওয়ার পর থেকেই ০৭ কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিপাঃ গুলোর পড়াশুনার মান অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মূলত সনদপত্র প্রদান, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, খাতা মূল্যয়নসহ সব কিছুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করে থাকে।
  • এখানে বিবিএ পড়াশোনা ও পরীক্ষা দেওয়া ইংরেজি কিংবা বাংলাতে দিতে পারে। তবে চিন্তা ভাবনা চলছে যে, আগামী শিক্ষা বর্ষ হতে উত্তরপত্র গুলো সম্পূর্ণ ইংরেজিতে লিখতে হবে। এখানের খাতা মূল্যয়ন মূলত ০২ জন পরীক্ষক করে থাকেন তাদের একজন হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অপরজন হলেন ০৭ কলেজের শিক্ষক। 
  • প্রতিটি বিষয় ফাইনাল পরীক্ষা ৮০ নম্বরের হয়ে থাকে বাকি ২০ মার্ক ইনকোর্স তথা স্যারেদের হাতে থাকে। ইনকোর্স ও লিখিত পরীক্ষায় আলাদাভাবে পাশ করতে হয়। এখানে ৭০% ক্লাশ করা বাধ্যতামূলক। ৬০% এর নিচে হলে কোনভাবেই ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার সুযোগ নাই।
Bangladesh_Open_University

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি ::বিবিএ অনার্স কোর্স

বাউবির অধীনে চার বছর মেয়াদী ০২ ধরনের বিবিএ কোর্স চালু আছে একটি হলো সাধারন তথা বাংলা মাধ্যম এবং অপরটি হলো প্রফেশনাল বিবিএ তথা আইবিএ কারিকুলাম ধাচের তথা ইংরেজি মাধ্যম। আধুনিক যুগের চাহিদা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার মানের সাথে তাল মিলিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ও চালু করেছে এই ধরনের বিবিএ কোর্স। সাধারণ অনার্স (বিবিএ) ও প্রফেশনাল বিবিএ'তে চার বর্ষে মোট আট সেমিস্টার। প্রতি বর্ষ দুটি সেমিস্টার নিয়ে গঠিত। প্রথমত আলোচনা করবো বিবিএ (বাংলা মাধ্যম) অনার্স কোর্স নিয়ে। বাংলা মাধ্যম ও প্রফেশনাল বিবিএ উভয় মাধ্যমেই ০৪ বছরে ৪০ টি কোর্স শেষ করতে হয়।

বিবিএ বাংলা মাধ্যম:

  • এই কোর্সে পড়াশোনা করতে চাইলে কোন ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া লাগেনা। মূলত এসএসসি, এইচএসসি ও বয়সের স্কোরের ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ প্রদান করা হয়। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যম তথা প্রফেশনাল বিবিএ কোর্স করতে গেলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয়।
  • বাউবির অন্যান্য বিষয়ে অনার্স ভর্তি হতে গেলে ভর্তি পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে হয়। কিন্তু বিবিএ বাংলা মাধ্যম ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনা করা অনেকের জন্য সহজ হবে।বাংলা মাধ্যম হলেও এর পড়াশোনার বিষয় নিয়ে আপনাকে ভয় পাওয়ার দরকার নাই। কারন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ০৭ কলেজের মত আপনাকে সব সময় প্রাইভেট পড়া এবং মোটাসোটা বই কিংবা কোন গাইড বই পড়া লাগবেনা।
  • এই কোর্সের সবগুলো বই আপনি টিউটোরিয়াল কেন্দ্র হতে ফ্রি পাবেন। বইগুলো সম্পূর্ণ বাংলাতে লেখা। সহজ সরল প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত। এবং বইগুলোও অনেক ছোট, হযবরল কোন আলোচনা নাই। 
  • আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি বাংলা মাধ্যমের বিবিএতে ভর্তি পড়াশোনা করলে আপনাকে তেমনভাবে প্যাড়া লাগবেনা। এই কোর্সের টিউটোরিয়াল ক্লাশ শুধুমাত্র শুক্রবারে করতে হয়। এই কোর্সের প্রতিটা বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষা ৬০ মার্কের দিতে হয়। বাকি মার্ক টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের স্যারেদের হাতে থাকে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ইজিলি এখান হতে মার্ক তুলতে পারবেন।
  • এই বিষয়য়ে পড়াশোনা করার জন্য আপনাকে ঢাকাতে অবস্থান করার প্রয়োজন নাই। আপনার নিকটন্থ জেলা শহর ও বিভাগীয় শহরে স্টাডি সেন্টার পাবেন। ০৪ বছর মিলিয়ে পড়াশোনার খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা মত।
এখানে কিভাবে ভর্তি হতে হয় ও কোথায় স্টাডি সেন্টার রয়েছে তা জানতে নিচের ইমেজটি ভালভাবে দেখুন:
 
bba__bangla_version_circular

নিজের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা:

আসলে আমি কোন পন্ডিত কিংবা বিজ্ঞ লোক নই এমনকি কোন ভাল মানেরও ছাত্র নই। তবে নিজে তথ্য অনুসন্ধান, গবেষণা ও পড়াশোনা বিষয়ক কাজ করতে ভালো লাগে। আমি অসুন্ধান করে ও বিভিন্ন শিক্ষাবিদদের কাছ হতে জেনেছি যে, দেশে প্রায় ১০০ টির মত বেসরকারি- বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এদের মধ্যে হাতে গোনা প্রায় ১০-১২ টির মত ভালো, অধিকাংশ গুলোই যেনতেনভাবে চলছে। সুতরাং ঐ সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে পড়াশোনার চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ০৭ কলেজের বিবিএ অনার্স এর মান অনেক ভালো। আসলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিন্তু অনেক ভালো সিজিপিএ পাওয়া যায়, সেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ০৭ কলেজের বিবিএ পড়তে হলে আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয় ভালো সিজিপিএ আর্ন করতে। এই তো গেলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ০৭ কলেজের কথা। এবার আসি বাউবির বিবিএর বিষয় নিয়ে। আমাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ গ্যাপ দিয়ে পড়াশোনা করেছেন কিংবা ঝড়ে গেছেন শিক্ষা জীবন হতে। নতুন করে অনেকেই পড়াশোনা শুরু করেছেন কিংবা শুরু করবেন তাদের জন্য বিশেষত যারা সহজে অনার্স করতে চান তাদের জন্য সহজ মাধ্যম হলো বিবিএ বাংলা মাধ্যমে ভর্তি হওয়া। কারন, দীর্ঘ গ্যাপের কারনে আপনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ০৭ কলেজে অনার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবেন না। আবার, বাউবির অন্য বিষয়ে অনার্স পড়তে হলে ঢাকাতে অবস্থান করা, ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া সহ অন্যান্য ঝামেলা রয়েছে। কিন্তু বাংলা মাধ্যম বিবিএ পড়াটাই অনেক সহজ, ব্যয়ও অনেক কম, ঢাকাতে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। 
         
শেষকথাঃ

বিষেশত যারা নিজের শিক্ষায় দক্ষতা আহরোণে, শিক্ষা জীবনের অনার্স ট্যাগ ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য নিঃসন্দেহে বাউবির বিবিএ বাংলা মাধ্যম একটি জনপ্রিয় প্রফেশনাল কোর্স। তাছাড়া বাউবির সনদপত্রও সরকারি। কাজকর্মের ফাঁকে ফাঁকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক অর্জন করার যুগপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাউবি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। তাই যারা বয়স্ক শিক্ষাথী ব্যবসায় প্রশাসনে ডিগ্রি অর্জন ও ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদেরকে বলবো বাউবিতে ভর্তি  হতে। অন্য যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছেনে তাদেরতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ০৭ কলেজ। পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন ও কমেন্ট করুন। 

উল্লেখ্য আমাদের ব্লগ সাইট ভিজিট করতে ব্রাউজারের সার্চবার কিংবা গুগলে গিয়ে পিয়নমামা ডটকম কিংবা Peonmama লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। আরেকটি বিষয়, পিয়নমামা ডটকম সাইটে শুধু লেখাপড়া বিষয়ক নই পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে চাকরির বিজ্ঞপ্তি, কম্পিউটার টিপস, অনলাইনে ইনকামের কৌশল, ফ্রিল্যান্স, ক্যারিয়ার আড্ডা, সফটওয়্যার রিভিউ ও ই-কমার্স  নিয়ে পোস্ট পাবলিশ করা হবে।  

Share this post with friends

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment

Rules for commenting: Linking comments made without any reason for the purpose of getting backlinks will not be approved. However, linking comments for reasonable reasons will be approved after verification. Moreover we always follow zero spamming policy. So Be Careful..! to the policy of according at this blog.

comment url